Art as Resistance: How ‘Dreams on a Pillow’ Preserves Palestinian Narratives

Table of Contents

বেশিরভাগ ভিডিও গেম আমাদের ফ্যান্টাসির জগৎ বা অ্যাকশন-ভিত্তিক অ্যাডভেঞ্চারে নিয়ে যায়। কিন্তু একটি নতুন গেম বেছে নিয়েছে অন্যরকম পথ। “Dreams on a Pillow” গেমের মাধ্যমে ইতিহাস বলছে এবং সহানুভূতি গড়ে তুলছে। ফিলিস্তিনি নির্মাতা রশীদ আবুয়াইদেহ এই গেমটি তৈরি করেছেন একটি গুরুত্বপূর্ণ গল্প তুলে ধরার জন্য।

গেমের পেছনের গল্প

“Dreams on a Pillow” এর গল্পের ভিত্তি একটি ফিলিস্তিনি লোককথা, যা ১৯৪৮ সালের নাকবার সময়কার। নাকবা সেই সময় যখন অসংখ্য ফিলিস্তিনি তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছিলেন আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে।

গেমটি ফলো করে ওম নামে এক তরুণী মায়ের গল্প, যার স্বামীকে হত্যা করা হয়। বাঁচার জন্য শিশুসন্তানকে নিয়ে পালানোর সময়, ভুল করে সে কেবল একটি বালিশ নিয়ে নেয়।

এই গল্প প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বলা হয়েছে। আবুয়াইদেহ এই গল্প বেছে নিয়েছেন, কারণ এটি নাকবার গভীর বেদনা ও ফিলিস্তিনিদের ফিরে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ফুটিয়ে তোলে।

বালিশটির মধ্যে রয়েছে গভীর প্রতীক – এটি হারানো ও স্মৃতির প্রতীক। গল্পের বিভিন্ন সংস্করণে শেষটা ভিন্ন হয়: কোনোটিতে ওম পাগল হয়ে যায়, কোনোটিতে মারা যায়, আবার কোনোটিতে পালিয়ে বাঁচলেও আর কখনো বাড়ি ফিরতে পারে না। এই পরিণতিগুলো ফিলিস্তিনিদের বাস্তব ঘটনার প্রতিফলন।

গেমপ্লে: কীভাবে খেলা হয়

“Dreams on a Pillow” একটি স্টেলথ অ্যাডভেঞ্চার গেম। খেলোয়াড়রা ওমের চোখ দিয়ে বিশ্ব দেখে, যখন সে লেবাননের দিকে পালাতে চেষ্টা করে।

dreams on a pillow - 2

গেমের কেন্দ্রে রয়েছে সেই বালিশটি:

  • বালিশ বহন করলে ওম শুধু হাঁটতে পারে
  • বালিশ নামালে সে লাফাতে, হামাগুড়ি দিতে, উঠতে বা পাথর ছুঁড়তে পারে
  • কিন্তু বালিশ নামালেই তার ট্রমা থেকে দুঃস্বপ্ন তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়

এই সেটআপ খেলোয়াড়দের সামনে কঠিন সিদ্ধান্ত রাখে। বালিশটি সীমাবদ্ধতা তৈরি করে, কিন্তু একইসাথে সবচেয়ে বড় ভয়ের মুখোমুখি হওয়া থেকে রক্ষা করে। কখন বালিশ বহন করবে আর কখন নামাবে – সেটিই মূল চ্যালেঞ্জ।

গেমটি নাকবার আগে এবং চলাকালীন সময়ের জীবনকেও দেখায়, যাতে বোঝা যায় কত কিছু হারিয়েছে।

ইতিহাসের এক অন্যরকম চেহারা

“Dreams on a Pillow” ইতিহাসকে সত্যভাবে দেখাতে চায়। এটি চ্যালেঞ্জ করে সেই পুরনো কথাকে: “একজন মানুষের জন্য জনশূন্য এক ভূমি” – যা ফিলিস্তিনকে জনশূন্য দেখায়।

গেমটি দেখায় ১৯৪৮ সালের আগের ফিলিস্তিন – যেখানে নানা সংস্কৃতি ও জাতি একসাথে বসবাস করত।

গেমের মধ্যে খেলোয়াড়রা কিছু ঐতিহাসিক ঘটনাও দেখতে পাবে: যেমন আল-তান্তুরার গণহত্যা, আতলিত শিবির, হাইফার পতন এবং শরণার্থীদের ওপর হামলা – যা অনেক ইতিহাসের বইতে খুব কমই লেখা থাকে।

জাতিসংঘ প্রাক-নাকবা ফিলিস্তিনকে “একটি বহুজাতিক ও বহুসাংস্কৃতিক সমাজ” হিসেবে বর্ণনা করেছে। এই ইতিহাসকে গেমের মাধ্যমে দেখিয়ে খেলোয়াড়দের সাথে নতুনভাবে সংযোগ তৈরি করে।

নির্মাতার নিজের গল্প

এই গেম তৈরির গল্পটিও গেমটির মতোই শক্তিশালী। রশীদ আবুয়াইদেহ এর আগে “Liyla and The Shadows of War” নামে একটি গেম তৈরি করেছিলেন, যা ২০১৪ সালের গাজা যুদ্ধের এক মেয়েকে নিয়ে।

সেই গেমটি ভালো রিভিউ পেলেও তিনি বড় সমস্যা মুখোমুখি হন। অ্যাপল একে “খুব বেশি রাজনৈতিক” বলে ব্যান করেছিল; পরে মিডিয়ার চাপে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে।

এরপর নতুন প্রজেক্টের জন্য আর কোনো পাবলিশার তাকে সাপোর্ট দিতে রাজি হয়নি, কারণ তার বিষয়গুলোকে “বিতর্কিত” মনে করা হয়েছিল। পরিবারের খরচ চালাতে তিনি নিজ শহর নাবলুসের কাছে এক বাদাম ভাজার দোকান (নাট রোস্টারি) খুলেছিলেন।

এখন সেই দোকান ফাঁকা পড়ে থাকে, কারণ ইসরায়েলি বসতিস্থাপন (সেটলার) কার্যক্রমের কারণে সেখানে যাওয়াটাই নিরাপদ নয়। পশ্চিম তীরে গেম তৈরি করা সত্যিই কঠিন। আবুয়াইদেহ এক সাক্ষাৎকারে বলেন:

“শুধু বাচ্চাদের স্কুলে নিয়ে যাওয়াটাই বড় ব্যাপার। কোন রাস্তা নেব, কোথায় চেকপয়েন্ট, কখন রাস্তা বন্ধ হবে – কিছুই জানি না।”

তবুও তিনি আবার গেম তৈরি করতে ফিরেছেন। যখন স্বাভাবিক ফান্ডিং মিলছিল না, তখন তিনি ক্রাউডফান্ডিংয়ের পথ বেছে নেন।

সব বাধা পেরিয়ে সাফল্য

“Dreams on a Pillow” এর ক্রাউডফান্ডিং অভিয়ান অসাধারণ সাফল্য পেয়েছে। LaunchGood এ এটি $১৯৪,৮০০ লক্ষ্য রাখলেও তুলেছে $২৪০,৫০২ এর বেশি।

এটি আরও বড় কথা, কারণ:

  • পাবলিশাররা একে “খুব বেশি বিতর্কিত” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে
  • দশ বছর ধরে ফান্ডাররা ফিরিয়ে দিয়েছিল
  • অনেক ক্রাউডফান্ডিং সাইট ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয় না

এই সাফল্য প্রমাণ করে – মানুষ সত্য ইতিহাস ও রাজনৈতিক গল্প নিয়ে গেম দেখতে চায়। গেমিং কমিউনিটি আর সাংবাদিকদের সহায়তায় খবর ছড়িয়ে পড়ে।

পুরো গেম বানাতে প্রায় $৪৯৫,০০০ প্রয়োজন হবে। এখনকার ফান্ডিং দিয়ে মূল লেভেলগুলো তৈরি শুরু হবে; পরে আরও ফান্ডিং তোলা হবে।

শিল্প ও প্রতিরোধ হিসেবে গেম

“Dreams on a Pillow” দেখায় গেম কীভাবে একসাথে শিল্প ও প্রতিরোধের হাতিয়ার হতে পারে। যেমন পিটার কির্ন বলেছেন:

“গেম এক বিশেষভাবে শিল্প আর সহানুভূতিকে একত্র করে। গেম মানেই তো দৃষ্টিভঙ্গি আর কাজ।”

ফিলিস্তিনি ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে গেম তৈরি করে, আবুয়াইদেহ একদিকে গল্পগুলো সংরক্ষণ করেন, অন্যদিকে প্রচলিত ইতিহাসকে চ্যালেঞ্জ জানান। এভাবে গেম ফিলিস্তিনের গল্প মুছে ফেলার বিরুদ্ধে লড়ে এবং বোঝাপড়া তৈরি করে।

পিটার কির্ন আরও বলেন:

“শিল্পকে অরাজনৈতিক হতে হবে না। এটি শক্ত বার্তা বহন করতে পারে এবং এক অনন্যভাবে আবেগকে প্রকাশ করতে পারে।”

ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে

“Dreams on a Pillow” আমাদের শেখায় গেম শুধু বিনোদনের জন্য নয়। এটি ইতিহাস বাঁচিয়ে রাখতে পারে, প্রচলিত বর্ণনা প্রশ্ন করতে পারে এবং সংস্কৃতির মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে পারে।

আপনি যদি গেম, ইতিহাস বা রাজনীতির ভক্ত হন – এই প্রজেক্টটিকে অবশ্যই চোখে রাখার মতো। কারণ এটি এমন গল্প বলে, যা হয়তো হারিয়ে যেত। খেলোয়াড়দের জটিল বিষয়গুলোর সাথে নতুনভাবে ভাবায়।

এ ধরনের প্রজেক্ট গেমিংকে আরও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যায়। গেম শুধু আনন্দ নয় – জানায়, চ্যালেঞ্জ করে আর পরিবর্তনও আনতে পারে

দ্রষ্টব্য: “Dreams on a Pillow” এখনো তৈরি হচ্ছে। এই আর্টিকেলটি ২০২৫ সালের জানুয়ারির ক্রাউডফান্ডিং ক্যাম্পেইন আর সংবাদভিত্তিক।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।